রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১০:১৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বাজেটে ঘাটতি অর্থের সংস্থান হবে যেভাবে

বাজেটে ঘাটতি অর্থের সংস্থান হবে যেভাবে

স্বদেশ ডেস্ক:

আদর্শ বাজেটে ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে। গত কয়েক বছর এমন আদর্শ মেনেই বাজেট করেছে সরকার। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে এবার বিচ্যুতি হচ্ছে। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটে ঘাটতি ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। খবর অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রের।

জানা গেছে, আগামী ১১ জুন বৃহস্পতিবার আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো বাজেট উপস্থাপন করবেন। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪৫ হাজার ১৯০ কোটি টাকা বেশি।

আগামী অর্থবছরে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। অনুদান ব্যতীত বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৬ শতাংশ।

জানা গেছে, আগামী বছর ঘাটতি বাজেট পূরণে অধিক মাত্রায় ঋণনির্ভর হচ্ছে সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নিবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি, সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি ও অন্য খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৫২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মুনসুর আমাদের সময়কে বলেন, আগামী অর্থবছর বাজেটে ঘাটতি ঠিক রাখাই হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি হলে সমস্যা নেই। প্রতিবছর প্রবৃদ্ধির ৫ শতাংশ ধরেই ঘাটতি বাজেট নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এ বছর অনুদান ছাড়া ৬ শতাংশ ধরা হয়েছে। তাতে সমস্যা নেই। আরও বেশি হতে পারত। তবে পরবর্তী সময়ে রাজস্ব আহরণের ওপর জোর দিতে হবে।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) কর রাজস্ব আহরণ করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি করবহির্ভূত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং করব্যতীত প্রাপ্তির পরিমাণ হচ্ছে ৩৩ হাজার ৩ কোটি টাকা। আয়ের দিক থেকে আগামী বছরে বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা।

তবে রাজস্ব আহরণ নিয়ে খোদ এনবিআরই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম অর্থসচিবের কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ধরা হচ্ছে বলে এনবিআরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে তিনি আশাবাদী নন। কারণ ১ জুলাই থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও স্থানীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া রেখে যাবে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান অর্থবছরের সম্ভাব্য আদায়ের ওপর আগের গড় প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ ধরে হিসাব করলেও আগামী অর্থবছরের মোট আহরণ ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কোভিড-১৯ স্বাভাবিক না হলে রাজস্ব আহরণের জন্য দুর্দিন। ব্যবসা-বাণিজ্য নেই। করদাতাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। অর্থবছর শেষে দেখা যাবে ব্যাংকগুলো ভালো লভ্যাংশ দিতে পারছে না। কারণ তাদের মুনাফা কমে যাবে। ঋণের সুদেও হার ও ইনস্টলমেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, লার্জ ট্যাক্সপেয়ার ইউনিট (ভ্যাট ও ট্যাক্স) মোট রাজস্বেও ৬০-৭০ শতাংশ আহরণ করে। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকায় তা আদায় করা সম্ভব হবে না।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877